হাই কোর্টের রায়ে সিউড়ি পুরসভায় ফিরলেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান

হাই কোর্টের রায়ে সিউড়ি পুরসভায় ফিরলেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান
বীরভূম: তারিখে হাই কোর্টের একটি বিভাগীয় বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করে। রায়ে বলা হয়, প্রণব কর -এর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনও বৈধতা নেই এবং তাঁকে কাউন্সিলরের পদ থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল তা ভুল। ফলে, তিনি আবারও সিউড়ি পুরসভার কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
এই রায়ের পর থেকেই সিউড়ি পুরসভায় উৎসবের আমেজ চলছে। প্রণব কর-এর সমর্থকরা এই রায়কে তাঁদের বিজয় হিসেবে দেখছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে সিউড়ি পুরসভার উন্নতি হবে বলে আশাবাদী। 
কলকাতা আদালতের নির্দেশে ফের নিজের কাউন্সিলর পদ ফিরে পেলেন সিউড়ির 'পদত্যাগী' পুরপ্রধান প্রণব কর।  সিউড়ি পুরসভার জরুরি বৈঠকের পর প্রণব করের বাড়িতে পুরসভার পক্ষ থেকে চিঠি পাঠিয়ে তাঁকে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। প্রণববাবু জানান, "এটা আইনের জয়। এরসঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। কাল অথবা সোমবার ফের আমি পুরসভায় গিয়ে নিয়মিত কাজে যোগ দেব।” অন্যদিকে আদালতের রায়ে প্রণববাবু ফের কাউন্সিলর পদ ফিরে পেতে তাকে স্বাগত জানান সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। গত বছর ৪ আগষ্ট পুরপ্রধান ও একইসঙ্গে তাঁর নিজের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের পদ থেকে পদত্যাগপত্র দেন প্রণব কর। পুরসভার বৈঠকে পুরপ্রধানের পদত্যাগপত্র গৃহীত হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে কাউন্সিলর পদে ইস্তফা বোর্ড অফ কাউন্সিলরর্স গ্রহণ করেনি। ফলে জটিলতা বাড়ে। ঘুরপথে কাউন্সিলর পদে ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করেন তাঁরই দলের সতীর্থরা।
বিচার চেয়ে প্রণববাবু কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি কৌশিক চন্দ্রের আদালতে যান। সেখানে ২০০৬ সালের রাজস্থানের একটি পুরসভার রায় উল্লেখ করে প্রণববাবুকে ফের কাউন্সিলর পদ ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন হাই কোর্টের বিচারপতি। উল্টে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি নিস্ক্রিয় হওয়ায় লোকসভা নির্বাচনে ৫৭৯টি ভোটে হারতে হয় সাংসদ শতাব্দী রায়কে।
এদিকে প্রণববাবুকে পুরসভায় আসা আটকাতে কলকাতা হাইকোর্টে জয়মাল্য বাগচি ও গৌরাঙ্গ কান্থের এজলাসে যান সিউড়ি পুরপ্রধান উজ্জ্বলবাবু। তিনি সে সময় দাবি করেন, আদালতকে ভুল তথ্য দিয়ে একতরফা রায় পেয়েছেন প্রণববাবু। কিন্তু শুক্রবারের পুরসভার জরুরি বিওসি-র বৈঠকে উপস্থিত ১৮ জন কাউন্সিলরের সামনে বৃহস্পতিবারের ডিভিশন বেঞ্চের রায় নিয়ে পুর আইনজীবী সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের তথ্য হাজির করা হয়। এখনও আদালতের রায় পুরসভায় এসে পৌঁছায়নি। পাশাপাশি প্রণববাবু সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে পুরপ্রধানকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার কাউন্সিলর পদ ফিরিয়ে না দিলে আদালত অবমাননার কথা জানিয়ে চিঠি দেন। যার জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে প্রণববাবুকে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। রাতেই তাঁকে সেই চিঠি পুরসভার পক্ষ থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে কাউন্সিলর পদ ফিরে পাওয়ার পর বিরোধীশুন্য সিউড়ি পুরসভার তৃণমূলের পুরবোর্ডে পরবর্তী রাজনীতি নিয়ে চিন্তিত কাউন্সিলররা। পদত্যাগের কারণ হিসাবে প্রণববাবু যেমন তার শারীরিক কারণ দেখিয়েছিলেন, তেমনই চিঠিতে তার পুরপ্রধান থাকাকালীন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর আর্থিক অসহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেছিলেন। যদিও পদ ফিরে পেয়ে প্রণববাবু বলেন, "আমি তৃণমূলের সৈনিক। দল যা নির্দেশ দেবে আমি সেভাবেই চলব।"
জনমত:
সিউড়ির সাধারণ মানুষ এই রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। একদিকে যেমন অনেকেই প্রনব কোর-এর ফিরে আসাকে স্বাগত জানিয়েছেন, অন্যদিকে অনেকেই এই রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এই রায়ের পর সিউড়ি পুরসভার রাজনীতি কী রূপ নেবে তা দেখার জন্য সকলেই উন্মুখ। প্রণব কর আবারও পুরসভার দায়িত্ব নেওয়ার পর সিউড়ির উন্নয়নে কী ধরনের পদক্ষেপ নেন তা দেখার জন্য সকলেই অপেক্ষা করছেন।h