সেপ্টেম্বরে রাজ্য জুড়ে তিন দিনের ট্রাক চাক্কা জ্যামের ডাক

সেপ্টেম্বরে রাজ্য জুড়ে তিন দিনের ট্রাক চাক্কা জ্যামের ডাক
বীরভূম: মহম্মদবাজারে জাতীয় সড়কের পাশে টোল প্লাজাকে সামনে রেখে আগামী মাসে তিন দিন রাজ্য জুড়ে ট্রাকের চাক্কা জ্যামের সিদ্ধান্ত নিল ফেডারেশন অফ ওয়েষ্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন। খয়রাকুড়ির বন্ধ থাকা টোল প্লাজার সামনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ট্রাক সংগঠনেরা নেতারা এসে এই সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁদের দাবি, তাঁদের এই তিনদিনের ধর্মঘটকে ইতিমধ্যে চারটি রাজ্য সমর্থন করেছে। অল ইন্ডিয়া মোটর অ্যাসোসিয়েশন এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে। আগামী ১১, ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর সাত দফা দাবির ভিত্তিতে রাজ্য জুড়ে তিনদিনের চাক্কা জ্যামের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। যার মূল কারণ হিসাবে অ্যাসোসিয়েশন দাবি বেসরকারি ওয়ে ব্রিজের অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। আন্ডারলোড গাড়ি থেকে ২৩৬ টাকা করে নেওয়া চলবে না।
উল্লেখ্য মহম্মদবাজারের খয়রাকুড়িতে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে গত অক্টোবর থেকে ওয়ে ব্রিজ চালু করেছে রাজ্য প্রশাসন। রাস্তায় যাওয়া সব গাড়িকে বাধ্যতামূলকভাবে সেই ওয়ে ব্রিজের ভিতর দিয়ে যেতে হত। আন্ডারলোড ট্রাককেও পণ্য পরিবহণের জন্য খাতায় কলমে ২৩৬ টাকা দিতে হত। জেলা ট্রাক ও টিপার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এই আদায়কে অবৈধ দাবি করে গত ১২ আগষ্ট থেকে তা বন্ধ করে দেয়। কারণ তাঁদের দাবি ওই ওয়ে ব্রিজে জমাট ঘুঘুর বাসা বেঁধেছে। কিছু ট্রাক চালক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে রফা করে রাতের অন্ধকারে ওভারলোডের গাড়ি পার করছে। আশপাশের জেলা এমনকি জেলার অন্যত্র এই টোল প্লাজা না থাকায় মার খেতে হচ্ছে এই রাস্তার ট্রাক এবং টিপার অপারেটর হিসাবে কল্যাণ ত্যাগ অভিযোগ নিয়ে তাঁরা পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে দরবার করেন। গত সপ্তাহে রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে আধিকারিকেরা জেলায় এসে ওই টোল প্লাজা ঘুরে দেখেন। জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক করেন। কিন্তু তারপরেও কোনও সদুত্তর না পাওয়ায়, বুধবার পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বালুরঘাট, আলিপুরদুয়ার, মালদহ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ-সহ অনান্য জেলার ট্রাক অ্যাসোসিয়েশন এসে এদিনের খয়রাকুড়িতে বৈঠক করেন। রাজ্য ট্রাক অ্যাসোসিয়েশন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সজল ঘোষ, কার্যকরী সম্পাদক প্রবীর চট্টোপাধ্যায়-সহ অনান্য নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই সাত দফা দাবির ভিত্তিতে সেপ্টেম্বরে ৭২ ঘণ্টা ট্রাক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। যার প্রথম দাবি সারা রাজ্যে ওভারলোড বন্ধ করতে হবে। পুলিশ, সিভিক, ডাক পার্টির অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। রাজ্য সরকার ১৫ বছরে পুরনো গাড়ি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ২০ বছর করতে হবে। বাংলাদেশে ট্রাক নিয়ে যাওয়া চালকদের উপর সে দেশের লোকেদের অত্যাচার বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। জেলা সংগঠনের সম্পাদক আনাশ আহমেদ জানান, "রাজ্য পরিবহণ আইনের ২৮৭ নম্বর ধারার ১১৩ নম্বর নিয়মে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা সন্দেহজনক ট্রাককে ওই টোল প্লাজায় নিয়ে যেতে পারেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা আইন বলবত করতে পারেন। সব ট্রাককে ওই টোলের ভিতর দিয়ে নিয়ে যাওয়া বে আইনি। আন্ডারলোড গাড়ি থেকে ২৩৬ টাকা করে নেওয়া অবৈধ।"
এদিনের বৈঠকে ট্রাক ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের রাজ্য সংগঠন সমর্থন করেছে বলে তাদের দাবি। একইসঙ্গে খয়রাকুড়ির টোল চিরদিনের মতন বন্ধ রাখার দাবি ওঠে। 
এই ডাকের ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জরুরি পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে বাজারে দাম বাড়তে পারে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পেতে পারে।