কেন জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণকে তালের বড়া খেতে দেওয়া হয়?

কেন জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণকে তালের বড়া খেতে দেওয়া হয়?
সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়: আমাদের আদরের গোপালের জন্মদিন ৷ ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার শ্রী কৃষ্ণ হয়ে জন্ম নিয়েছিল মাতা দেবকীর গর্ভে ৷ ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের ঘরে ঘরে চলছে এই দিন গোপাল পুজোর আয়োজন হয় ৷ দুধ-ঘি-মধুতে স্নান সেরে নতুন জামা, গয়না পরে, ফুল-চন্দন-আতরে আজ সেজে ওঠেন গোবর্ধনধারী ৷
জন্মাষ্টমীর পুজো শুরু হবে অষ্টমী লাগার পর ৷ এ বছর দু’টি আলাদা আলাদা দিনে পড়েছে জন্মাষ্টমী ৷  দু’দিনই অষ্টমী থাকছে, ফলে পুজোও দু’দিন করা সম্ভব ৷ 
শ্রীকৃষ্ণের পুজো করার সময় কয়েকটি নিয়ম অবশ্যই মানতে হবে ৷ শাস্ত্রে রয়েছে দুর্ভাগ্যকে, সৌভাগ্যে পরিণত করতে শুধু কৃষ্ণ নামই যথেষ্ট ৷ এদিন নতুন করে সাজিয়ে তুলুন কৃষ্ণ মূর্তিকে ৷ পরান নতুন পোশাক, গয়না ৷ কৃষ্ণকে ভোগ দিন মাখন, মিছরি ৷
এদিন বিগ্রহকে লাল জামা পড়ান ৷ ১০ টি কয়েনে সিঁদুর এবং হলুদ লাগিয়ে গোপালের সামনে রাখুন ৷ ভোগের সঙ্গে তুলসি পাতা দিতে কিন্তু ভুলবেন না ৷ ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতি করুন ৷ সকাল থেকে ঘরে কৃষ্ণ নাম করতে পারেন ৷
তবে এই দিন কিন্তু কৃষ্ণকে অবশ্যই তালের বড়া দিতে হবে ৷ শুধু বড়া নয়, তালের তৈরি নানারকম সুস্বাদু খাবারের পদ দিয়ে সাজিয়ে দিতে হবে কৃষ্ণের ভোগ ৷
ভাদ্র মাসে কৃষ্ণের জন্ম ৷ এ সময় তাল গাছে বড় বড় কালো পাকা তাল হয়ে থাকে ৷ তাই কৃষ্ণেরও পছন্দ তালের বড়, তাল ক্ষীর, তালের লুচি ৷
পুরাণ মতে, বাসুবেদ কৃষ্ণকে নন্দরাজের কাছে রেখে আসার পর গোকুলে কৃষ্ণের আবির্ভাব উপলক্ষে নন্দ উৎসবেই প্রথম খাওয়া হয়েছিল তালের বড়া।
তাই এই বড়া কৃষ্ণের খুবই প্রিয় ৷
এসে গেল বছরের সেই সময়। তাড়িয়ে তাড়িয়ে তালের বড়া খাওয়ার উৎসব। শোনা যায়, বাসুবেদ কৃষ্ণকে নন্দরাজের কাছে রেখে আসার পর গোকুলে কৃষ্ণের আবির্ভাব উপলক্ষে নন্দ উৎসবেই প্রথম খাওয়া হয়েছিল তালের বড়া। কৃষ্ণের অতি প্রিয় এই খাবারটি ভালবাসেন সকলেই।
জন্মাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণকে তালের বড়া দেওয়াটা প্রাচীন নিয়ম। তালের বড়া-সহ নানারকম সুস্বাদু খাবারের পদ দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয় কৃষ্ণের ভোগ। ভাদ্র মাসে তাল হয়ে থাকে৷ তাই কৃষ্ণের ভোগে তালের রকমারি পদ দেওয়া হয়।
এটা ছাড়া ভোগ অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। আর শ্রীকৃষ্ণকে ভোগ হিসেবে তালের বড়া, ক্ষীর, তালের লুচি,তালের মালপোয়া রকমারি খাবার সাজিয়ে দেওয়া হয়। গোপালকে সকলে বাড়ির আদরের ছোট শিশুর মতো মনে করেন। তাই ভালবেসে তাকে একাধিক ভোগ উৎসর্গ করা হয়।
পাকা তালের রস দিয়ে মিষ্টি বানানো হয়। তালের বড়া কমবেশি সবাই খেয়েছি। কারণ সেটা বাড়িতে প্রায়শই বানানো হয়। কিন্তু কখনও তালের রস দিয়ে মিষ্টি বানাতে দেখা যায় না। যার টেক্সচার তালের বড়ার সঙ্গে না মিলে তেলে ভাজা মিষ্টির সঙ্গে মিলে যেমন গুলাবজামুন, কালোজাম ইত্যাদির মতো লাগে।
তাই এই বছর জন্মাষ্টমীতে আপনি শ্রী কৃষ্ণের ভোগ হিসেবে নিবেদন করতে পারেন তালের মিষ্টি।