ক্ষুব্ধ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
malda, pakuriyahat, nationalhumanrightscomission,
জেলা সংবাদদাতা, মালদা: মালদার পাকুয়াহাটে দুই মহিলাকে নগ্ন করে মারধর কাণ্ডে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। আগামী ১৮ জুনের মধ্যে দুই নির্যাতিতা মহিলাকে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার জন্য শেষবারের মতো নির্দেশ দিল কমিশন। না হলে ১৩ ও ১৪ ধারা অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে। জানা যায়, এই ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিলেও তা পালন করেনি রাজ্য সরকার। তাই এবারে শেষবারের মতো দুই নিগৃহীত মহিলাকে তিন লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল জাতীয় মাননাধিকার কমিশন। সেই নির্দেশ না মানলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। উল্লেখ্য, গত বছর ২২ জুলাই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় একটি ভিডিও ক্লিপ। ওই ভিডিওর কথা সোশাল মিডিয়ায় টুইট করেন বিজেপির আইটি সেলের অমিত মালব্য। ওই ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, প্রচুর মানুষের ভিড়। তারমধ্যে প্রমীলা বাহিনী দুই মহিলাকে বেধড়ক মারধর করছেন। চলছে জুতোপেটাও। ঘটনাস্থলে রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়াররাও। তাঁদের মধ্যে এক সিভিক আবার মহিলা। কিন্তু মাত্র দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার অত মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। মারের চোটে দুই মহিলার পোশাক খুলে যাওয়ার উপক্রম। একসময় এক মহিলা সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হয়ে পড়েন। গোটা ঘটনাটি দাঁড়িয়ে থেকে উপভোগ করেন অসংখ্য মানুষ। তার মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই বেশি। সেই সময় বিজেপি নেতা অমিত মালব্য তাঁর টুইটে দাবি করেন, ১৯ জুলাই বামনগোলা থানার পাকুয়াহাটে এই ঘটনাটি ঘটেছে। যদিও সেই সময় বামনগোলা থানার পুলিশ দাবি করেছিল, সেখানে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। যা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয় সারা রাজ্য জুড়ে। পরে উঠে আসে ঘটনার সত্যতা। অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দুই মহিলাকে তিন লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তারপর বহু দিন কেটে গেলেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি দুই মহিলার। এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আইনজীবী অমিতাভ মৈত্র বলেন, ‘ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা, রাজ্য সরকার সেই নির্দেশের কোনও উত্তর দেওয়ারও প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি। বাধ্য হয়েই আমরা ফের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে নালিশ জানাই। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আগামী ১৮ জুনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার জন্য শেষবারের মতো নির্দেশ দিয়েছে। না হলে ১৩ ও ১৪ ধারা অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে। এছাড়াও নির্দেশ না মানলে ২০ পিএইচআর ধারায় বিষয়টি প্রকাশ্যে (পাবলিশড) নিয়ে আসার কথাও বলা হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হুঁশিয়ারি চিঠিতে। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। এই রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। মহিলারাই নির্যাতিতা হয়েছেন। অথচ রাজ্য সরকার কিছুই করছে না। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তাদের নির্দেশ দেওয়ার পরও কোনও ভূমিকা নেই তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের কটাক্ষ বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ীর। যে দুই মহিলা নির্যাতিতা হয়েছিলেন রাজ্য সরকার তাঁদের পাশে থেকে সর্বত্রভাবে সাহায্য করেছে, পাল্টা দাবি তৃণমূলের মালদা জেলার সহ-সভাপতি শুভময় বসুর।