ধসে চাপা পড়ে আবারও মৃত্যু তিন শ্রমিকের!
বীরভূম জেলার পাথর খাদানে ধস নেমে তিন শ্রমিকের মৃত্যু । নলহাটি থানার মহিষাগড়িয়া গ্রাম সংলগ্ন পাথর খাদানে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তিনটি শ্রমিকের মৃত্যুর সাথে সাথে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নামিয়েছে।
আজ এখন ডেস্ক, দেবপ্রিয়া কর্মকার, ২রা সেপ্টেম্বর: বীরভূম জেলার পাথর খাদানে ধস নেমে তিন শ্রমিকের মৃত্যু । নলহাটি থানার মহিষাগড়িয়া গ্রাম সংলগ্ন পাথর খাদানে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তিনটি শ্রমিকের মৃত্যুর সাথে সাথে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নামিয়েছে। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া এই অঞ্চলে পাথর খাদানে পাথর ভাঙার কাজ করতে গিয়ে চারজন শ্রমিকের উপর হঠাৎ করেই ধস নামে, যার ফলে তিনজন শ্রমিক পাথরের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুবরণ করেন এবং একজন গুরুতর আহত হন। এ দুর্ঘটনা সকলের জন্য এক বেদনাদায়ক স্মৃতি হয়ে রইল, যা এই অঞ্চলে পাথর খাদানের বিপজ্জনক পরিস্থিতির উপর নতুন করে আলো ফেলেছে।
দুর্ঘটনাটি ঘটে আজ সকাল ১০টা নাগাদ। মহিষাগড়িয়া গ্রাম সংলগ্ন এই পাথর খাদানে শ্রমিকরা নিয়মিতভাবেই পাথর ভাঙার কাজ করতেন। খাদানে খননকাজ চলাকালীন শ্রমিকরা নিচু জায়গায় কাজ করছিলেন, যা আকস্মিকভাবে ধসে পড়ে। এতে চারজন শ্রমিক পাথরের নিচে চাপা পড়েন। ঘটনাটি অত্যন্ত আকস্মিক ছিল, যার ফলে শ্রমিকরা বাঁচার সুযোগ পাননি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খাদানটি অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল, এবং এতে এর আগে কখনও বড় ধসের ঘটনা ঘটেনি।গুরুতর আহত একজন শ্রমিককে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা মহিষাগড়িয়া গ্রাম এবং এর আশপাশের এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত শ্রমিকদের পরিবারগুলোতে শোকের আবহ বিরাজ করছে। তাদের সকলেই দিনমজুর পরিবার থেকে আসা, যারা প্রতিদিন খাদানে কাজ করে জীবনযাপন করতেন। মৃতদের মধ্যে একজনের বয়স মাত্র ৩৫ বছর এবং তাঁর পেছনে রয়েছে স্ত্রী এবং দুটি শিশু সন্তান। এদের একমাত্র আয়ের উৎস ছিল খাদানে কাজ করা, যা এখন হারিয়ে গিয়েছে।এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য, পাথর খাদানের কাজটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও এতে সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অনেক সময়ই এই খাদানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না মেনেই কাজ চালানো হয়, যা বিপজ্জনক হতে পারে।
দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। বীরভূমের জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। খাদানে ধস নামার কারণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব নিয়ে বিশেষ তদন্ত শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে, এই ধরনের দুর্ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে, তার জন্য কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।প্রশাসনের এখন জরুরি কাজ হলো সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দেওয়া এবং এমন ব্যবস্থা করা যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো শ্রমিককে এই ধরনের বিপজ্জনক অবস্থায় কাজ করতে না হয়। শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য খাদানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।