বৃদ্ধার দাবি আবাস যোজনায় একটি বাড়ি! পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস পঞ্চায়েত সমিতি
বৃদ্ধা মোমবাতির ভরসায় দিন কাটান। কেরোসিন কেনার মতোনও ক্ষমতা নেই তাদের। এই অবস্থায় তার মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে নিয়ে একাই থাকেন অষ্টমী দিকপতি। তার ইচ্ছা আবাস যোজনায় একটি বাড়ি করবেন।
আজ এখন ডেস্ক, দেবপ্রিয়া কর্মকার,১৩ নভেম্বর:
ইটের দেয়াল করা ভাঙাচোরা বাড়ি। মাথার ওপর অ্যাসবেস্টসের, তাও ভাঙ্গা। সন্ধ্যে না হতে হতেই তাদের বাড়ি অন্ধকার হয়ে আসে। এমনকি বাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকলেও, বিল মেটাতে না পারায় সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। বৃদ্ধা মোমবাতির ভরসায় দিন কাটান। কেরোসিন কেনার মতোনও ক্ষমতা নেই তাদের। এই অবস্থায় তার মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে নিয়ে একাই থাকেন অষ্টমী দিকপতি। তার ইচ্ছা আবাস যোজনায় একটি বাড়ি করবেন। তিনি বলেন, "পঞ্চায়েত থেকে টাকাটা পেলে এই ঘরই সারাই করে ছেলেটাকে নিয়ে নিশ্চিন্তে একটু ঘুমোতে চাই।" তবে বৃদ্ধার আবাসের তালিকায় নামই নেই। একটু থেমে তিনি বলেন, "আমি শুনেছি তালিকায় আমার নাম নেই। তবুও অনেকবার বলেছি পঞ্চায়েতকে। যদি দয়া হয়!"
অষ্টমীদেবী দাসপুর এক নম্বর ব্লকে কৃষ্ণপুর গ্রামে থাকেন। কয়েক বছর আগেই তার স্বামী মারা গিয়েছে। তার দুইটি ছেলে আছে, বড় ছেলের বিয়ে হয়ে গেছে তারা আলাদা থাকে এবং ছোট ছেলে কার্তিককে নিয়ে তিনি ওই ভাঙ্গার জন্য বাড়িতে থাকে। তার ছোট ছেলে আবার মানসিক ভারসাম্যহীন।
অষ্টমীদেবীর অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে তিনি যে বার। তার ইচ্ছা ছেলেকে ভালো জায়গা চিকিৎসা করবে। আর বাড়ি তো নয়, যেন ভুতুড়ে! বৃষ্টি হলেই ঘরময় জলকাদায় ভরে যায়। নড়বড়ে দরজা আছে তো জানালা নেই। একটি জানালা থাকলেও তাও নড়বড়ে। চারপাশ ফাঁকা। ঝড়ঝাপটা হলেই অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয় মা-ছেলেকে।
উৎকণ্ঠায় অষ্টমীদেবী। প্রতিবেশী তাপসী দোলই, কল্যাণী দিকপতি বলেন, "ওঁদের কিছু নেই। ভিক্ষায় সংসার চলে। ছেলেটাতো ওইরকম! মোমবাতি কেনারও পয়সাটুকু নেই। এঁদের যদি সরকার না দেখে কাকে দেখবে? একটা বাড়ি তো ব্যবস্থা করা যায়।" অষ্টমীদেবীর পাশে দাঁড়াতে চান দাসপুর এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার পাত্র। তিনি বলেন, "অষ্টমী দিকপতির বিষয়টি দেখার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বলেছি। যতরকমের সাহায্য করা যায় সবই করা হবে। পঞ্চায়েত প্রধানকে বিস্তারিত জানাতে বলেছি। আবাস যোজনার বিষয়টি দেখতে হবে। যদি সম্ভব হয় নিশ্চয়ই দেখা হবে।" মিলবে কি আবাস যোজনায় একটা বাড়ি? এই আশায় দিন কাটছে অষ্টমীদেবীর।