রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা জহর সরকারের
তিলোত্তমা কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন জহর সরকার(Jawhar Sircar)
আজ এখন ডেস্ক, পুস্পিতা বড়াল: তিলোত্তমা কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন জহর সরকার(Jawhar Sircar)। তিন বছর আগে তৃণমূল কংগ্রেসের(Trinamool Congress) সাংসদ করা হয়েছিল বিশিষ্ট এই আমলাকে। এই প্রসঙ্গে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে(chief minister)। সেই চিঠির প্রথম স্তবকেই তিনি জানিয়েছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে সাংসদ নির্বাচিত করে আপনি আমাকে প্রভূত সম্মানিত করেছেন। বিভিন্ন সমস্যা সরকারের দৃষ্টিগোচর করবার সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি অনেক চিন্তা করে দেখেছি, সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করব। রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করব।’ এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, জহর সরকার এর আগেও তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। যা নিয়ে সৌগত রায়-সহ অন্যান্য সাংসদদের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। সেই বিষয়টিও চিঠিতে উল্লেখ করেন জহর সরকার। তিনি জানান, সে সময়েই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলেন, কারণ অপেক্ষা করে গিয়েছিলেন, কারণ সে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাটমানির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন-পদক্ষেপ করেছিলেন, তা নিরন্তর চালাবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু জহর সরকারের কথায়, তা হয়নি।
এবার চিঠিতে জহর সরকার যে ভাষায় তাঁর কথা তুলে ধরেছেন তা হল, ‘মাননীয়া মহোদয়া, বিশ্বাস করুন এই মুহূর্তে রাজ্যের সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ও রাগের বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখছি, এর মূল কারণ কতিপয় পছন্দের আমলা, দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পেশীশক্তির আস্ফালন।’ তিনি আরও লেখেন, ‘সরকারের কোনও বক্তব্যকেই মানুষ বিশ্বাস করছে না। পুরনো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কেন ঝাঁপিয়ে পড়ে কথা বলছেন না।’
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, আরজি কর কাণ্ডে প্রথমে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় সোচ্চার হয়েছিলেন। তিনি ধরনাতেও বসেছিলেন। এমনকি গ্রেফতারির আশঙ্কা করে কলকাতা হাইকোর্টে তাঁকে আগাম জামিনের আবেদন করতেও দেখা গিয়েছিল। বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ম্যাডাম চেয়ারপার্সন তো তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করার জন্য নন। তাঁকে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান উপরাষ্ট্রপতির কাছে দিতে হবে। তবে বিনীত গোয়েলকে জুনিয়র ডাক্তাররা শিরদাঁড়া উপহার দিয়েছেন। জহর সরকারের মধ্যে আমরা যে মানসিকতা দেখলাম তাতে ভাল লাগল। তিনি প্রাক্তন আমলা। স্পষ্টবাদী।’
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ‘এক জন ছেড়েছেন, আরেকজন ছাড়ুন। স্রোতের অনুকূলে তো কচুরিপানাও ভাসে। উল্টোদিকে সাঁতার না কাটলে তো মানুষ জন্ম বৃথা।’ যুদ্ধের সময় পালানোর সঙ্গে জহর সরকারের ইস্তফাকে তুলনা করেছেন দেবাংশু।