পর পর দুবার কালাচ সাপের কামড়, জীবন্ত সাপ ধরে হাসপাতালে বধু
গৃহবধুর অলক্ষ্যে একটি কালাচ সাপ আমচকা বধুর বিছানায় ঢুকে পড়েছিল।বধুকে পর পর দুবার কামড় দেয়।সাপে কামড় দিয়েছে বুঝতে পারেন। এরপর ওই বধু তাঁর পরিবারের সদস্যদের ঘুম ভাঙিয়ে ঘটনার কথা বলেন।
নিজস্ব সংবাদদাতা: ব্যতিক্রম, অবিশ্বাস্য এবং আশ্চর্যজনক।পর পর দুবার বিষধর সাপের কামড় দেওয়ায়, জীবন্ত সাপ ধরে নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে হাজীর হলেন বধু।সাতসকালে এক গৃহবধুর হাতে জীবন্ত সাপ দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায় হাসপাতালের অন্যান্য রোগী,রোগীর পরিবার পরিজন সহ চিকিৎসকরা।সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কুলতলি থানার অন্তর্গত গঙ্গাধরপুর গ্রামে।বর্তমানে ওই বধু ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সুত্রে জানা গিয়েছে কুলতলি থানার অন্তর্গত গঙ্গাধরপুর গ্রামের বধু পূর্ণিমা হালদার।মুশারি টাঙিয়ে ঘুমিয়েছিলেন।ভোর নাগাদ ঘুম থেকে উঠে তাঁর স্বামী কাজে গিয়েছিলেন।গৃহবধুর অলক্ষ্যে একটি কালাচ সাপ আমচকা বধুর বিছানায় ঢুকে পড়েছিল।বধুকে পর পর দুবার কামড় দেয়।সাপে কামড় দিয়েছে বুঝতে পারেন। এরপর ওই বধু তাঁর পরিবারের সদস্যদের ঘুম ভাঙিয়ে ঘটনার কথা বলেন।পরিবারের সদস্যরা বিছানা থেকে জীবন্ত কালাচ সাপটি উদ্ধার করে। একটি কৌটোয় ভরে ফেলেন।জীবন্ত সাপ নিয়ে ওই বধুকে জামতলার কুলতলি-জয়নগর হাসপাতালে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য।সাপ দেখে চিকিৎসকরা ওই বধুর চিকিৎসা শুরু করেন।মুহূর্তে ওই বধুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা ওই বধুকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন।
পরিবারের লোকজন বারুইপুর হাসপাতালে না গিয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে হাজীর হয়। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওই বধুর চিকিৎসা শুরু করেন। তাঁকে সাপে কামড়ানো প্রতিষেধক এভিএস ৫০ টি দেওয়া হয়।শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে সিসিইউতে স্থানান্তরিত করে চিকিৎসকরা।
বধুর ভাইপো মঙ্গল হালদার জানিয়েছে, ‘বিছানার মধ্যে কাকিমাকে একই সাপ দুবার কামড় দিয়েছে জানতে পেরে বিছানা থেকে সাপটি ধরে ফেলি। তড়িঘড়ি জামতলার কুলতলি-জয়নগর হাসপাতালে যাই চিকিৎসার জন্য। সেখান থেকে বারুইপুরে স্থানান্তরিত করা হয়। আমরা বারুইপুরে না গিয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে যাই। কারণ সাপে কামড় দিলে চিকিৎসা পরিষেবায় সারা পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ক্যানিং হাসপাতালই সেরার সেরা।বর্তমানে কাকিমা সুস্থ রয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।’ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্প বিশেষঞ্জ চিকিৎসক ডাঃ সমরেন্দ্র নাথ রায় জানিয়েছেন, ‘সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে এসেছিলেন পূর্ণিমা দেবী। ফলে দ্রুততার সাথে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন।’
ডাঃ রায় সাধারণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘সাপ কামড় দিলে ধরে কিংবা মেরে হাসপাতালে আনার প্রয়োজন নেই।কারণ সাপ ধরতে গেলে আবারও কামড় দেবে,ফলে বিষের মাত্রা আরো বাড়বে।সাপ কামড় দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাঁধন না দিয়েই নিকটবর্তী সরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জরুরী। সেক্ষেত্র রোগীর প্রাণ সংশয়ের কোন ভয় থাকে না।’