প্রতিদিন খালি পেটে কফি খাচ্ছেন? কিন্তু জানেন কী কত বড় বিপদ ডেকে আনছেন? জানুন এখনই
অনেকেরই দিনের শুরুটা হয় চা বা কফির সঙ্গে। এক কাপ চা কিংবা কফি না খেলে যেন ঘুম ভাঙতেই চায় না। কাজেও মন লাগে না। তাই এক কাপ কফি বা চা মাস্ট। কেউ কেউ আবার ঘুমানোর আগে কফি খেতে পছন্দ করেন। কফিতে রয়েছে অনেক উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা আপনাকে সতেজ অনুভব করতে সাহায্য করে।
আজ এখন ডেস্ক, দেবপ্রিয়া কর্মকার, 16 অক্টোবর: অনেকেরই দিনের শুরুটা হয় চা বা কফির সঙ্গে। এক কাপ চা কিংবা কফি না খেলে যেন ঘুম ভাঙতেই চায় না। কাজেও মন লাগে না। তাই এক কাপ কফি বা চা মাস্ট। কেউ কেউ আবার ঘুমানোর আগে কফি খেতে পছন্দ করেন। কফিতে রয়েছে অনেক উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা আপনাকে সতেজ অনুভব করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ক্লান্তি দূর হয় এবং শরীর তৎক্ষণাৎ ভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে। পরিমাণে অল্প চা এবং কফি খাওয়া স্বাস্থ্যকর। কিন্তু অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ শরীরে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে।
সারা দিনে বেশ কয়েকবার কফি পান করতে পছন্দ করে অনেক মানুষ। এনার্জি না থাকলে কাজে মন বসে না। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে কফি খেলে শরীরে ক্যাফেইনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ক্যাফেইনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া মানেই, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যার দিকে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছেন আপনি। ক্যাফেইনের অত্যধিক সেবন হৃদরোগ থেকে হজম পর্যন্ত অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিদিনের কাজে মনোনিবেশ করতে কিংবা কাজের চাপ এবং ক্লান্তির কারণে প্রতি ঘণ্টায় কফি খাওয়া শুরু করেন কফিপ্রেমীরা। দিনে দিনে এটি অভ্যাসে পরিণত হতে থাকে। কিন্তু এই ধরণের ক্রমাগত কফি খাওয়ার প্রবণতা একেবারেই ভালো নয়।
ক্যাফিন কীভাবে শরীরের উপর প্রভাব ফেলে?
শরীরকে সচল রাখে অনেকগুলি বিষয়। যার মধ্যে হৃদস্পন্দন, রক্ত প্রবাহ এবং ঘুমের মতো বিষয়গুলি রয়েছে। এইগুলি মানুষের শরীরে থাকা রাসায়নিক অ্যাডেনোসিন দ্বারা প্রভাবিত হয়। অ্যাডেনোসিন হল শরীরে প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন পদার্থগুলির মধ্যে একটি। অ্যাডেনোসিন শরীরের বিভিন্ন কোষের বাইরের স্তরে পাওয়া যায়, যা কিডনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যখন কফি পানের মাধ্যমে ক্যাফেইন গ্রহণ করা হয়, তখন তা দ্রুত রক্তের প্রবাহের সঙ্গে শোষিত হয়। এটি শরীরে রিসেপ্টরগুলিকে সঠিক ভাবে কাজ করতে বাঁধা দেয়।
কফি পানের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কফি পানের অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু অত্যাধিক পরিমাণে কফি পান, অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই অভ্যাস ডেকে আনে নানান ব্যাধি। অত্যাধিক ক্যাফেইন গ্রহণ আপনার শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে একজন ব্যক্তি যখন দিনে কয়েকবার কফি খান, তখন তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, অতিরিক্ত কফি খাওয়ার ফলে কী কী ধরনের সমস্যা হতে পারে।
ব্ল্যাক কফি পানের পর শরীরের উপর খারাপ প্রভাব
হজমের সমস্যা: অতিরিক্ত কফি খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে। অ্যাসিডিটি এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS) এর মতো হজমের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভবনা থাকে। পাকস্থলীতে অ্যাসিড উৎপাদনকে বাড়িয়ে তোলে ক্যাফেইন। এর ফলে অম্বল, গ্যাস্ট্রাইটিস, আলসার এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যাগুলি আরও বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত পরিমাণে কফি পান করলে বা ক্যাফেইন গ্রহণ করলে, হাড় দুর্বল হতে শুরু করে। যা অস্টিওপোরোসিসের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এমনকি ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে। তাই কফি পান করুন নিয়ম মেনে।
উচ্চ রক্তচাপ: কারোর হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কফি না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই ধরনের রোগীদের জন্য অতিরিক্ত কফি পান করা বিপজ্জনক হয়ে দেখা দিতে পারে। কফি মূলত রক্তচাপ বাড়াতে কাজ করে। উপরন্তু, ক্যাফিন মানুষের হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করতে পারে। আবার রক্তে শর্করার মাত্রাকেও প্রভাবিত করে ক্যাফিন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তোলে কফি। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের কফি পানের অভ্যাস যত দ্রুত সম্ভব ছেড়ে দেওয়া উচিত।
উদ্বেগ: মানসিক চাপ, ঘুম থেকে মুক্তি পেতে এবং রোজকার অফিসের কাজে মনোনিবেশ করতে মানুষ অতিরিক্ত পরিমাণে কফি পান করতে শুরু করে। আবার অনেকেই রাত জেগে পড়াশোনার জন্য কফির উপর ভরসা করে। এতে শরীরও বেশি পরিমাণে ক্যাফেইন গ্রহণ করে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে এটি করলে উদ্বেগ, বিরক্তি ও দুশ্চিন্তার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কফির অত্যাধিক সেবন আপনার হার্ট বিট রেট বাড়িয়ে দিতে পারে, যার কারণে প্যানিক অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যারা ইতিমধ্যে প্যানিক অ্যাটাকের মতো সমস্যায় ভুগছেন, তাদের সর্বদা কফি থেকে দূরে থাকা উচিত।